অশ্বত্থামা হতঃ

299.00

বইএর নাম – অশ্বত্থামা হতঃ
লেখিকা – সাগরিকা রায়
প্রকাশনা – পলান্ন প্রকাশনী
অলংকরণ – সপ্তর্ষি চ্যাটার্জি

Category:

Description

পণ্ডিতজনে বলেন ” যাহা নাহি মহাভারতে তাহা নাহি ভারতে। ” পৌরাণিক ভারতের এক অনন্য আখ্যান হলো মহাভারত আর অশ্বত্থামা এক জটিলতর চরিত্র। শৈশবে পিতার দারিদ্রের কারণে দুধ ভেবে পিটুলিগোলা জল পান করা, ব্রহ্মাস্ত্রের জ্ঞানসম্পন্ন হয়েও কৌরবভাইদের অধীনে ভুলপথে চালিত হওয়া, অন্যায়ভাবে পাণ্ডবপুত্রদের নৃশংস হত্যা ও শেষে অমরত্বের অভিশাপলাভ ; এই হলো মহাকাব্যের পাতা থেকে অশ্বথামার সংক্ষিপ্ত চরিত্রায়ন। পিতার নয়নের মণি এই পুত্রটি আদৌ কি জীবনে কখনো শান্তি পেয়েছিলেন! নাকি উচ্চাকাঙ্খা – প্রতিশোধ – অভিশাপ – প্রবঞ্চনার ঘূর্ণাবর্তে ঘুরপাক খেতে খেতে আবিষ্কার করেছিলেন চিরন্তন সত্যের! কে জানে!

মহাভারতের এমনই এক জটিল চরিত্রকে নিয়ে উপন্যাস লিখেছেন লেখিকা সাগরিকা রায় দিদিভাই, বইএর নাম #অশ্বত্থামা_হতঃ। মনে পড়ে মহাকাব্যের কুরক্ষেত্র পর্বের সেই দৃশ্যটি! যেখানে স্বয়ং যুধিষ্ঠিরের মুখে ” অশ্বত্থামা হতঃ ইতি গজঃ” বাক্যটির প্রথম দুটি শব্দ শুনেই পুত্রশোকে অস্ত্রত্যাগ করেছিলেন গুরু দ্রোণ, তাঁকে মারতে পাণ্ডবভাইদের আর কোনো অসুবিধেই হয়নি!

আধুনিকতার মোড়কে পৌরাণিক কাহিনীকে উপস্থাপিত করা বড় জটিল বিষয়, বিশেষ করে তা যখন জ্বলজ্যান্ত একটি উপন্যাস হয়। এমন দুরূহ কাজে হাত দিয়েছেন স্বনামধন্য লেখিকা সাগরিকা রায় দিদিভাই, এবং আমি বলতে পারি এতে তিনি সর্বতোভাবে সফল।

কাহিনীর শুরু অনির্বাণ নামক চরিত্রটিকে নিয়ে, রাত নামলে যার ভেতরে শুরু হয় এক অদ্ভুত দোলাচল৷ নিজেকে শতানীক বলে পরিচয় দেয় সে, বন্ধুদের ডাকে প্রতিবিন্ধ্য, শ্রুতকর্মা, শ্রুতসেনা ও সুতসোম। নামগুলো কাদের বলুন তো! মহাকাব্যের সেই অসহায় পাণ্ডুপুত্রগণ যাদের অন্ধকারের আড়ালে ঘুমের মধ্যে নৃশংসভাবে হত্যা করেছিলেন অশ্বত্থামা। এই আধুনিক পৃথিবীতে দাঁড়িয়ে অনির্বাণের নিজেকে শতানীক বোধ হয়, নানারকম যুদ্ধের স্মৃতি বিমূর্তরূপে আনাগোনা করে তার মননে। আদপে সে কে? অনির্বাণ নাকি শতানীক? আর তার বন্ধুরা? আদপে কি তারাও উঠে এসেছে মহাভারতের পাতা থেকে! একি বাস্তব নাকি ইলিউশন! অশ্বত্থামা কোথায়? কেমন হবে যদি মহাকাব্যের হত্যাকারীর মুখোমুখি আবার হয় তার শিকারেরা? পাশার দান কি উলটোবে?

এই অজস্র প্রশ্নের জবাব নিয়েই এই বই, যেখানে বহতা নদীর মতো আধুনিক কালের সঙ্গে চোরাস্রোতের মতো এসে মিশেছে পুরাণ – মহাকাব্য – জাতিস্মরবাদ। বইটির পাতায় পাতায় ছড়িয়ে আছে এক অদ্ভুত দ্বন্দ্ব, যা শিহরিত করবে আপনাকে।

যাঁরা রহস্য উপন্যাস ও পুরাণকাহিনি দুটোই বড়ো ভালোবাসেন তাঁরা পড়ে দেখুন, ভালো লাগবে পুরাণ ও আধুনিকতার এই আশ্চর্য ককটেল। সাগরিকা দিদিভাইয়ের লেখনীর নিপুণতা কোনো প্রশ্নের অবকাশ রাখে না, বইটিতে আলাদা মাত্রা যোগ করে সুন্দর অলংকরণ।

বইটির প্রকাশক পলান্ন প্রকাশনী, ডার্ক ফ্যান্টাসি থ্রিলারের লেখিকার হাত দিয়ে এতসুন্দর একখানি আধুনিক পৌরাণিক উপন্যাস উপহার দেওয়ার জন্য তাঁদের ধন্যবাদ। আর প্রচ্ছদের কথা না বললেই নয়, সত্যিই প্রচ্ছদটি বড়ো সুন্দর।

অশ্বত্থামা মহাভারতের অন্যতম প্রিয় চরিত্র আমার, তাকে নিয়ে রহস্য উপন্যাস আমার বেশ ভালোই লেগেছে৷ সেইসঙ্গে ভালো লেগেছে তথ্যের ভারে ভারাক্রান্ত না হওয়া সুদৃশ্য ঝরঝরে লেখনী। লেখিকার কাছে আগামীতে আরো এমন লেখার দাবী রইলো।।

কলেজ স্ট্রিটের ভারতী বুক স্টল লিঙ্কে ক্লিক করে বই পাবেন
https://thecafetable.com/Ashwatthama_hata

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “অশ্বত্থামা হতঃ”

Your email address will not be published. Required fields are marked *