ত্রিমাত্রিক

250.00

বই- ত্রিমাত্রিক
লেখক- Sovan Kapuria
প্রকাশন- পলান্ন প্রকাশনী

Category:

Description

আকাশ কালো করে মেঘের স্তর সাজিয়ে মাঝে মাঝে ঝড় বৃষ্টি আসা একটা ল্যাধখোর ছেলের পক্ষে খুব ভালো । কারণটা হচ্ছে ইলেকট্রনিক জিনিসের থেকে দূরে থাকা এবং বইয়ের কাছে থাকা । কারেন্ট ছিল না তাই ত্রিমাত্রিক নিয়ে দুদিন বসেছিলাম । দুদিনে শেষ করেছি ।

প্রকাশন- পলান্ন প্রকাশনী
(পলান্ন প্রকাশনী সব সময় অন্য রকম কাজ করে এই বইটাও তার মধ্যে অন্তর্গত )
লেখক প্রসঙ্গ:- শোভন কাপুরিয়ার এটি প্রথম বই । আগেও ফেসবুকের তার নিজস্ব পেজ আছে সেখানে কিছু গল্প তিনি লিখতে শুরু করেন এছাড়াও অডিও স্টরি কিছু চ্যানেলে তার গল্প আসে । প্রথম থেকে তিনি অন্য ধারার লেখক , তাঁর গল্পের বিষয়বস্তু ভাবনাচিন্তা একটু আলাদা ও বিপরীতমুখী । কিন্তু তার লেখার গুণ এবং তার গল্পের প্লট তৈরির পেছনে যে ভাবনা চিন্তা সেগুলি অনেক অনেক আলাদা এই সময়ে দাঁড়িয়ে ।
বইপ্রসঙ্গ:- তিনটি গল্প দিয়ে সাজানো ত্রিমাত্রিক । ত্রিমাত্রিক কারণ তিনটে গল্প তিনটে ধরনের । প্রথম গল্প “হ্যারিসন রোডের শেষ বাড়িটা”- একটি লাভক্রাফ্টিয়ান ঘরানার গল্প , দ্বিতীয় গল্প “আউটপোস্ট কেবি ১১” – একটি হরর Sci-fi গল্প তার সাথে আছে বাস্তবতার ছোঁয়া। তৃতীয় গল্প “অবৈধ” – সম্পর্কের চক্রব্যূহ যেখানে ষড়রিপুর জাল বিস্তার করা আছে ।
গল্প গুলির বিষয়বস্তু ও আমার প্রতিক্রিয়া:-

১. হ্যারিসন রোডের শেষ বাড়িটা:-
হ্যারিসন রোড এর শেষ বাড়িটা সান্যাল দের বসবাস হঠাৎ কালো ঘন ছায়া ঘনিয়ে আসে পরিবার টার ওপর এক রাতে হঠাৎ করে পরিবারের মাথা সায়ন্তন সান্যাল নিজের বাড়ির বিড়ালটাকে হত্যা করে তখনই তার স্ত্রী তাকে বাঁচাতে খুন করে ? ঘটনা ক্রমে কদিন আগেই তাদের তৃতীয় বিবাহ বার্ষিকী ছিল । হঠাৎ এমন কি হলো সেই পরিবারে সেই অনুষ্ঠানের পর থেকে ? বাড়ির মধ্যে কি এমন কিছু প্রবেশ করেছিল যার প্রভাবেই মানসিক বিকৃতির হয়েছিল সায়ন্তনের ? নাকি লুকিয়ে আছে অন্য কোনো তৃতীয় ব্যক্তির প্রতিহিংসা ? মৃগাঙ্ক দেখা করতে যায় একজন উকিলের কাছে যে টাকা নিয়ে অপরাধীদের ছাড়ায় দোষী ব্যক্তিদের নির্দোষ প্রমাণ করে । রোহিণী তার স্বামীকে খুন করেছে কিন্তু তাকেই মৃগাঙ্ক নির্দোষ কেন প্রমাণ করতে চাইছে? উত্তর পেতে হলে গল্পটা পড়তে হবে।

প্রতিক্রিয়া :- গল্পটার প্রথম থেকে এত সুন্দর গতিশীল । একটা ঘটনার পরে আরেকটা ঘটনা একে অপরের পরিপূরক । সাজানো টা তো খুবই ভালো । তারওপর অবাক করেছে আমাকে গল্পের প্লট । যতগুলো চরিত্র ব্যবহার করা হয়েছে তাদের প্রত্যেকের ভূমিকা রয়েছে ।
স্টরি বিল্ডআপ খুব ভালো । আর টুইস্ট তো থাকবেই এবং সেখানে আমি খুব ভালো রকম চমকেছি । এই গল্পটা সত্যি দারুন ছিল।
২. “আউটপোস্ট কেবি ১১”
সময় ২৫৬৭ সাল। সিগনাস ২৭বি গ্ৰহের মধ্যে হওয়া দীর্ঘদিন দুই কর্পোরেশন এর মধ্যে যুদ্ধ চলছিল । এই যুদ্ধ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার জন্য দুই কর্পোরেশন এর মধ্যে একটা চুক্তি হওয়ার সিদ্ধান্ত হয় যেখানে চুক্তিটা নেয়া হবে সেই জায়গাটা হচ্ছে আউটপোস্ট কেবি ১১..

কিন্তু হঠাৎ সিগনাস গ্ৰহের সঙ্গে আউটপোস্ট কেবির সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় কোন কারনে । দীর্ঘ অনেক সময় পার হওয়ার পরও সেই কারণ জানা যায় না । সেখানেই অনুসন্ধান করতে পাঠানো হয় একটা বিশেষ দলকে অগ্নি, মিশেল , আদিত্য , চার্লস, নাফিসা । অগ্নিকে দলে নেয়ার কারণ অঞ্চলটি তার পূর্ব পরিচিত . কিন্তু কোন অজানা রহস্য আছে সেখানে ? যার জন্য অগ্নির মনের কোণে এখনো একটা ভয় রয়েছে ? এরা আদৌ কি মিশনে সাফল্য পাবে না অতীতের কোন পাপ এসে ধরা দেবে ? না কোনো প্রতিশোধ স্পৃহার জয় হবে ? কোন ধ্বংসের সূচনা হবে নাতো? এসব জানতে গেলে গল্পটা পড়তে হবে ।

প্রতিক্রিয়া:- শোভন দা যাকে বলে সাইফাই গল্পের আর্টিস্ট । প্রত্যেকটা ঘটনার পিছনে ভয় ধরানো অতীত থাকবেই। এটা একটা অ্যাডভেঞ্চার গল্প । যার পরোতে পরোতে ভয় আছে , প্রতিশোধ আছে , আবার জাস্টিস আছে। দাদা এই গল্পটা সমাজের একটা অন্য দিক তুলে ধরেছে। অতীতের পাতায় কালিমালিপ্ত ভালো মানুষি সেজে থাকা মুখোশ গুলো টেনে খুলে দেওয়া যায়।
ভালোবাসা যে সবকিছুর উর্ধ্বে তা প্রমানিত।

৩. অবৈধ
একটা জায়গায় গিয়ে খুন হন সৈকত , একটা কোম্পানির মাথা । রহস্যজনকভাবে তার আগের বছর আত্মহত্যা করেছেন তার ভাই সুকুমার । দুটোর মধ্যে কি কোনো যোগসূত্র রয়েছে না দুটোই একজন ব্যক্তির কাজ?

প্রীতম এক কিশোরের মা অদ্রিজা সবেমাত্র কয়েক মাস যাবত ডিপ্রেশনে থাকার পর বেরিয়ে এসেছে । ডিপ্রেশনে থাকার কারণ কি ? প্রীতমের দিদি অনেক সময় ধরে নিখোঁজ কিন্তু এর কোন পুলিশি ডায়রি কেন করা হয়নি ? এদিকে অজান্তেই তার স্বামী একটা অন্ধকার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে ! অদ্রিজা কি এটা জানতে পারবে ? অদ্রিজার স্বামী রজত কি সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে ?

প্রীতমের বান্ধবী শ্রেয়শীর বন্ধুর দিদি এক বছর আগে একটা অ্যাক্সিডেন্টে মারা যায় । সেই দুর্ঘটনার পেছনে কি সমাজের কোনো বড় মাথার হাত ছিল ? ইন্দ্রর সঙ্গে সেই মেয়েটার কি সম্পর্ক ? প্রীতম শ্রেয়সীর মাধ্যমে একটা সাদা খামে ইন্দ্র কে জিনিস পাঠায় কি পাঠিয়েছিল কী এমন ছিল যেটা দেখে ইন্দ্রর জীবন এক লহমায় অতীতে ফিরে গেছিল?

সৈকতের কোম্পানিতে আশা অফার কিভাবে রজতের কোম্পানি পেয়ে গেল ? এক্ষেত্রে সৈকতের স্ত্রী স্মিতার কি হস্তক্ষেপ রয়েছে ? সবকটি ঘটনা তার দিকেই আঙ্গুল দেখাচ্ছে কেন?

ইনভেস্টিং পুলিশ অফিসার অভীক দত্ত কি সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পাবে?
অনেক প্রশ্ন না প্রচুর প্রশ্ন কিন্তু উত্তর একে বারে পরিস্কার হয়ে যায় । উত্তর জানার জন্য তো গল্পটা অবশ্যই পড়তে হবে

প্রতিক্রিয়া:-

গল্পটা যখন শুরু করলাম সবেমাত্র একটা দুটো পাতা পড়েছি কখনো নিজেকে এতটা চক্রব্যূহর মধ্যে মনে হয় নি ,কিন্তু গল্পটা যত এগোতে লাগল যত চরিত্র পরিচিত হতে লাগল তাদের কাজকর্মের প্রক্রিয়া তাদের ভূমিকা , কবে যেন মনে হলো নিজেকে একটা খুব বড়ো জালের মধ্যে ফাঁসিয়ে ফেলেছি । আর একটা অদ্ভুত জিনিস প্রত্যেকটা চরিত্র প্রত্যেকটা চরিত্র সঙ্গে এতটা ইন্টার কানেক্টেড যেকোনোভাবে নয় পূর্ব পরিচিত নয় সদ্যপরিচিত। ঘটনার পরিবর্তনে গল্পের সূক্ষ চরিত্রগুলোর ও প্রভাব রয়েছে। অতীত বর্তমান ভবিষ্যৎ নিয়ে গল্পটা। প্রত্যেকটা চরিত্রের অতীত , বর্তমান নিয়ে লেখকের এত সুন্দর সাজিয়েছে সত্যি প্রশংসার দাবি রাখে ।
কিন্তু এই সব ঘটনা , সম্পর্কের জটিলতার ঊর্ধ্বে হচ্ছে প্রকৃত পাশে থাকা , ভালোবাসা । যেটা শ্রেয়শী হয়েছে প্রীতমের খারাপ সময়ে তার পাশে থেকে তার কথা শুনে তার listener হয়ে । এই দুজন সদ্য কিশোর-কিশোরীর এত খারাপ পরিস্থিতিতে সময়ে একে অপরকে বোঝা , বিশ্বাস করা ,আগলে রাখা এইটাই গল্পের ভালো দিক ।

এই গল্পে একটা জায়গায় একটাই ছবি দুরকম ভাবে ব্যবহার করা হয়েছে এর কারণটা কেন বুঝতে পারলাম না?

ওভারঅল দারুণভাবে শেষ করেছি তিনটা গল্প খুব ফাস্ট পড়েছি আমি সাধারন পড়ার চেয়ে । খুব ভালো সময় কাটালাম

 

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “ত্রিমাত্রিক”

Your email address will not be published. Required fields are marked *